

চাকুরী জাতীয়করণের দাবিতে আনসার বাহিনী দেশের প্রধান প্রশাসনিক ভবন সচিবালয়ের মূল ফটকে অবস্থান করে। রবিবার দিনভর তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সচিবালয়ের সামনে এসে জমায়েত হয়। তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের তারা অবরুদ্ধ করে রাখে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাদের দাবি মানার ঘোষণা দেওয়ার পরও তারা ক্ষান্ত হয়নি। পনের মিনিটের মধ্যে তারা লিখিত প্রজ্ঞাপন চায়। তাদের শান্ত করার জন্য ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, আবু বাকের মজুমদারসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া তাদের সাথে কথা বলেন। সমন্বয়ক ও উপদেষ্টাদের সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। আনসার বাহিনী এক পর্যায়ে তাদের উপর ক্ষীপ্র হয়। হাসনাত আব্দুল্লাহর মেসেজ পেয়ে মূহুর্তে সচিবালয়ের আশেপাশে হাজার হাজার ছাত্র জড়ো হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের সাথে আনসার বাহিনী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। হাসনাত আব্দুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয় এবং তাদের দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের তীব্র প্রতিরোধের গতিতে আনসার বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং তারা আত্মসমর্পণ করে। শিক্ষার্থীরা দাবি করেন ৫ আগস্টের পরাজিত শক্তি আনসার বাহিনীতে ঢুকে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে এবং বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে। সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, স্বৈরাচার হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে তার দোসররা এদেশে ঘাপটি মেরে রয়েছে, সাবধান করে দিচ্ছি সচিবালয়ের সামনে এসে কেউ বিশৃঙ্খলা করলে তার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। আবু বাকের মজুমদার বলেন, ফ্যাসিস্টরা আর কোনদিন এদেশের মাটিতে দাঁড়াতে পারবে না কোন আন্দোলনের নামে। এক শিক্ষার্থী বলেন, বন্যায় মানুষ মরে এদেশে আনসার লীগ তামাশা করে। আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাকে মারার সময় আনসারের কয়েক সদস্য ক্ষোভ ঝেরে বলে তোরা আন্দোলন করে এদেশ থেকে আওয়ামী লীগ উৎখাত করছস, তোদের খবর আছে।
হামলা সম্পর্কে আনসার সদস্যদের নিকট সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের উপর যারা হামলা করেছে তাদের চিনি না। আমরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করিনি। তৃতীয় কোন পক্ষ ফায়দা লুটতে চাচ্ছে। আহত শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে দেখতে গিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ছাত্রজনতার বিপ্লব যেন স্বৈরাচারের দোসররা নস্যাৎ করতে না পারে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তিনি আহবান করেছেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করে স্বৈরাচারের দোসরদের দমন করতে।