

লক্ষীপুরের রামগঞ্জ সিটি প্লাজা সংলগ্ন চৌরাস্তা থেকে ডাগ্গাতলি বাজার পর্যন্ত ওয়াপদা ১০ কিলোমিটারের সড়কটির কার্পেটিং উঠে গেছে অনেক আগেই। কোথাও কোথাও খোয়া-বালুর আস্তর পর্যন্ত নেই। সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দ।প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। দুই পাশ ভেঙে সঙ্কুচিত হয়ে গেছে রাস্তা। তার পরেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে দুয়েকটি ভ্যান-ভটভটি। নেহাত প্রয়োজন ছাড়া রাস্তা দিয়ে এখন আর যানবাহন চলাচল করছে না। বেহাল এ রাস্তা চাঁদপুর থেকে রামগঞ্জ হয়ে লক্ষীপুর পর্যন্ত বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধও এটি। দ্রুত সংস্কার করা না হলে বর্ষা মৌসুমের যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ।
সুত্রে জানায়, চাঁদপুর থেকে রামগঞ্জ হয়ে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধটিতে যানবাহন চলাচলের জন্য এলজিইডির তত্তাবধানে ২০০৫ সালে কার্পেটিং করা হয়। এরপর আর সংস্কার করা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পড়ে থাকায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে রাস্তাটি। একসময় এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ট্রাক, ট্রাক্টর, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, চার্জারভ্যান ও ভটভটি মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করত। নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত হওয়ায় লক্ষ্মীপুরসহ আসপাস এলাকায় অল্প সময়ে যাতায়াতের জন্য এ রাস্তাটি ব্যবহার করতেন বেশির ভাগ পথচারী। এখন রাস্তাটি এতই খারাপ যে একদিকে খানা খন্দে পরিনত অণ্যদিকে রাস্তা কেটে বহু পাকা স্থাপনা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠায় যে কোন সময় বেঁড়ি বাঁধে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশাল বিশাল গর্তের কারনে রাস্তাটি ভেঙে সঙ্কুচিত ও দুর্বল হয়ে পড়ায় বর্ষা মৌসুমে খালের পানি বাঁধে এসে আঘাত হানলে এলাকাবাসীর নির্ঘুম রাত কাটে। এ সময় বাঁধ ভেঙে যাওয়ার শঙ্কায় রাত জেগে পাহারা দিতে হয় তাদের।
স্থানীয় অটোরিকশা চালক কামাল হোসেন বলেন, মালবাহী ট্রাক্টর ও বেশি ওজনের ট্রাক চলাচলের কারণে সড়কের করুন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের ঝাঁকুনিতে অসুস্থ হয়ে পড়ে অধিকাংশ যাত্রী। এছাড়া মাঝে-মধ্যে তাদের যানবাহনেও বিপত্তি ঘটে। সড়কের খানা-খন্দের কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগছে তিনগুণ, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। মাঝে মধ্যে যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে।
লামচরের বাসিন্দা ডা: ইমরান হোসেন সোহেল,রামগঞ্জ সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও স্থানীয় বাসিন্দা মোরশেদুল আমিন বাবুসহ কয়েকজন জানান, বর্তমানে রাস্তাটি অত্র এলাকার মানুষের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের খানাখন্দে পানি জমে যায়। ফলে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে অসুস্থ রোগী নিয়ে যানবাহনে চলতে মানুষের কষ্ট চোখে দেখলে খুবই কষ্ট পাই।
রামগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম বলেন, বেঁড়ী বাধ এবং রাস্তাটি সংস্কার মানে একটি মেঘা প্রজেক্ট। এ কাজের সাথে পৌরসভা, এলজিএডি, পানি উন্নয়নবোর্ডের সংশ্লিষ্টতা আছে। এতে খরছ হবে প্রায় দশ কোটি টাকা। বেঁড়ী বাঁধ কেটে অনেকগুলো পাকা স্থাপনা করা হয়েছে। বন্যানিয়ন্ত্রক বেঁড়ী বাঁধ দখলকারী সকল পাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। এমপি মহোদয় এ ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। তিনি বার বার তাগিদ দেওয়ায় আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি প্রেরন করেছি।
লক্ষীপুর-১ রামগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য ড. আনোয়ার হোসেন খান জানান, গত আড়াই বছরে নতুন এবং সংস্কারসহ ১শত ৭০টি রাস্তার কাজসহ ব্যপক উন্নয়ন হয়েছে। ওয়াপদা সড়কটি প্রক্রিয়াধীন। এখানের মানুষ দীর্ঘ ৪৭ বছর পর আওয়ামীলীগ থেকে নৌকা মার্কায় বিপুল ভোটে আমাকে নির্বাচিত করেছে।