

নড়াইলের লোহাগড়ার উপজেলার কামারগ্রামে এক কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগে ওই কিশোরীর পিতা বাদী হয়ে জেলা পরিষদের সদস্যসহ ছয়জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছে। গতকাল বিকালে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তিন জনকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করেছে ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের কামারগ্রামের শওতক শেখের কিশোরী মেয়ে ও সরশুনা দাখিল মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী (১৩)র সাথে মোবাইল ফোনে পার্শ্ববর্তী কাশিপুর গ্রামের আমিনুর শেখের ছেলে অন্তর শেখের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত ৫ জুন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অন্তর শেখ ফোনের মাধ্যমে ওই কিশোরীকে রাত আটটার দিকে বাড়ি থেকে ডেকে ইজিবাইকে করে লাহুড়িয়া-কল্যাণপুরের দিকে নিয়ে যায়। পথে ভদ্রডাঙ্গা বাতাশি গ্রামের জোড়া ব্রীজ এলাকায় পূর্ব থেকে অবস্থানরত আসামী মাধবহাটি গ্রামের নুর ইসলাম ফকিরের ছেলে লিকু ফকির ও কামারগ্রামের বাদশা শেখের ছেলে জামিরুল শেখ ও প্রেমিক অন্তর শেখ ওই কিশোরীকে একটি পাটক্ষেতের মধ্যে নিয়ে রাত দশটার দিকে মুখ বেধে জোরপূর্বক পালাক্রমে ধষর্ণ করে।এ সময় জামিরুল স্মাট ফোনে ধর্ষণের দৃশ্য ভিডিও ধারণ করে । বিষয়টি কাউকে জানালে ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখায়। পরে ধর্ষকরা ওই কিশোরীকে অন্তরের ফুফাতো ভাই সরশুনা গ্রামের আজিজুল মুন্সীর বাড়ীতে রেখে চলে যায়। খবর পেয়ে পরের দিন সকালে পরিবারের লোকজন কিশোরীকে উদ্ধার করে বাড়ীতে নিয়ে আসে। পরে ওই কিশোরী ধর্ষনের শিকার হয়েছে বলে পরিবারের লোকজনকে জানায় ।
এ দিকে নড়াইল জেলা পরিষদের সদস্য সরশুনা গ্রামের মিশাম শেখ ও কামারগ্রামের মাতুব্বর আশরাফুল শেখ ধর্ষণের বিষয় টি ৬০ হাজার টাকায় মীমংশা করে । এ বিষয়ে মামলা না করার জন্য ওই কিশোরীর পিতাকে চাপ সৃষ্টি করে । ঘটনার ১০ দিন পর পুলিশের সহযোগিতায় কিশোরীর পিতা শওকত শেখ গতকাল মঙ্গলবার (১৫ জুন) সকালে লোহাগড়া থানায় তিন ধর্ষক ও শালীসকারীসহ ছয়জনকে আসামী করে মামলা করে (মামলা নং- ১৪ তারিখ ১৫.৬.২১)। পুলিশ এজাহারভুক্ত আসামী ধর্ষক অন্তর শেখ, লিকু ফকির ও ইজিবাইক চালক তুষারকে বিকালে আটক করেছে।
এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের সদস্য মিশাম শেখ জানান, ধর্ষণের বিষয়ে আমি মিমাংশা করতে চাপ প্রয়োগ করিনি। ষড়যন্ত্রমুলকভাবে আমাকে আসামী করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ আবু হেনা মিলন জানান, আটককৃত আসামীদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দির জন্য আদালতে এবং কিশোরীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে।