

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে জনদুর্ভোগ লাঘবে তিস্তার শাখা নদীর ওপরে একটি ব্রিজ নির্মাণ করেছে সরকার। কিন্তু ব্রিজের একপাশের সংযোগ সড়ক না থাকায় ২২ বছরেও দুই গ্রামের মানুষের ভোগান্তির অবসান হয়নি। সবচেয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসা নিতে যাওয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী, স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষক শিক্ষার্থীদের।
১৫ জুন (মঙ্গলবার) দুপুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে উপজেলার ৩নং তুষভান্ডার ইউনিয়নের চর বৈরাতী এলাকায়। ব্রীজটির পূর্বের অংশের নিচ থেকে সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পরিতক্ত অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে।
জানা গেছে, এলজিইডি’র আওতায় ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের চর বৈরাতী এলাকায় ২ লক্ষ ৯১ হাজার ১৬০ টাকা ব্যায়ে ব্রীজটি নির্মাণ করা হয় । কিন্তু গত ৬ বছর পূর্বে ব্রীজটির এক দিকে সংযোগ সড়কের কিছু অংশ তিস্তা নদীর পানির তোরে ভেঙ্গে যায়। ভেঙ্গে যাওয়া সড়ক মেরামত করার জন্য এলাকার অনেকেই জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার আবেদন করেও কোন লাভ হয়নি বলে জানান এলাকাবাসি।
বর্ষাকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ একটি সংযোগ সড়কের অভাবে বছরের পর বছর মারাত্বক দুর্ভোগে জীবন যাপন করছেন। আজও হয়নি সেই ব্রীজের সংযোগ সড়কের কাজ। এখন ব্রীজ আছে রাস্তা নেই। দেখারও যেন কেউ নেই।বর্তমানে ওইসব গ্রামের মানুষ আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ যোগাযোগ ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছে।
স্থানীয়রা জানান , ব্রীজ থাকলেও রাস্তা না থাকায় তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। ফলে তিন চার কিলোমিটার পথ উল্টো ঘুরে যাতায়াত করতে হয়। ব্রীজের একপাশে রাস্তা না থাকার কারণে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের পাশাপাশি অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষের চলাচলে চরম অসুবিধা হচ্ছে। এ ছাড়া কৃষি ও গবাদি পশুপালননির্ভর এলাকা এটি। চরের মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য প্রতিদিন হাট বাজারে যেতে হয়। ফলে ব্রীজের সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট না করায় দুর্দশার মধ্যে দিয়ে মানুষকে চলাচল করতে হচ্ছে।
চর বৈরাতী এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা আইয়ুব আলী(৬৭) নামে এক বৃদ্ধর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, হামার এলাকাত চেয়ারম্যান মেম্বাররা খালি আসি আসি ভোট নিয়া যায়। ভোট নেওয়ার আগত কত কথা কয় কিন্তু ভোট শ্যাষ হইলে আর ফিরিয়াও দেখে না।
দক্ষিণ ঘনেষ্যাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, এই সংযোগ সড়কটি মেরামত করতে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার এগিয় আসেননি।ফলে দীর্ঘ দিন ধরে ছেলে মেয়েরা খুব কষ্ট করে স্কুল কলেজে যায়। সংযোগ সড়ক না থাকায় এলাকাবাসি চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তিনি দাবি জানিয়ে আরো বলেন, এলাকাবাসির দুর্ভোগ কমাতে এবং ছাত্র ছাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধার্তে দ্রুততম সময়ে সংযোগ সড়কটি সংস্কার করার জন্য কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন ।
এ বিষয় উপজেলা প্রকৌশলী এ টি এম শামসুজ্জামানের সঙ্গে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই তবে অচিরেই সেতুটি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।