

বান্দরবানের আলীকদমের দুর্গমে পল্লীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৮ দিনে ১০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছেন মৃত্যু সংখ্যা ৫। গত সোমবার থেকে আক্রান্ত পাড়াসমুহে সেনা বাহিনী ও স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টীম অবস্থান করছে। এর মধ্যে বর্তমানে আরো ১৩৬ জন চিকিৎসাধীন আছে।
বুধবার সকালে কুরুকপাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো জানান, তাঁর ইউনিয়নের দুইটি ওয়ার্ডেও ৪টি পাড়ায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। আক্রান্তের খবর পাওয়র পর সেনাবাহিনী ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টীম পাড়াসমুহে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, গতকাল (১৫ জুন) পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি ওয়ার্ড মেম্বার ও পাড়ার লোকজন সূত্রে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী জানায়, আক্রান্ত পাড়াগুলোতে আমাদের স্বাস্থ্য কর্মীরাসহ সেনাবাহিনীর টীম অবস্থান করছেন। সেখান থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে এ পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ডায়রিয়া পরিস্থিতির খোঁজ-খবর নিতে গতকাল মঙ্গলবার আলীকদম সফর করেছেন বান্দরবানের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ মংক্যনু মার্মা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গম পাহাড়ি পাড়াসমুহে সারাবছর ধরে বিশুদ্ধ পানির অভাব রয়েছে। সেখানে সরকারিভাবে কোনপ্রকার টিউবওয়েল কিংবা রিংওয়েল স্থাপন করা হয়না। সেখানকার বাসিন্দারা ঝিরি, খাল ও ঝর্ণার পানি পান করে থাকেন। ফলে দুষিত পান করে হঠাৎ কুরুকপাতা ইউনিয়নের মাংরুম পাড়া ৫ জন, ইয়ুংচা মুরং পাড়ায় ৪ জন ও কচ্ছপঝিরি সোনাবী ত্রিপুরা পাড়ায় ১ জনসহ মোট ১০ জন ডায়রিয়ায় মারা যান। মৃত ব্যক্তিরা হলেন: মাংদন ম্রো (৫০), রেংকেন ম্রো (৪৫) ঙানলি ম্রো (৫২), সংপুর ম্রো (৪০), পাইনরিং ম্রো(৬), রামদন ম্রো (৪০), কাইকার ম্রো (৪৫), তুমলক ম্রো (৪০) চিংলে ম্রো (২২) ও জনরং ত্রিপুরা (৪০)।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গত সোমবার সেনা বাহিনীর আলীকদম জোনের উদ্যোগে হেলিকপ্টারযোগে চিকিৎসার সরঞ্জামসহ মেডিকেল টীম ওইদিন বিকেলে আক্রান্ত পাড়াসমুহে যান। সেখানে তারা চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। সাথে স্বাস্থ্য বিভাগও কাজ করছেন।
এদিকে মঙ্গলবার আইএসপিআর জানায়, সেখানে কয়েকজন মৃত্যুবরণ করলেও ১৩৬ জন নারী, পুরুষ ও শিশু ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মুমর্ষ অবস্থায় আছে। সেখানে খাবার পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। আলীকদম সেনা রিজিয়নের একটি টিম সেখানে কাজ করছে, একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরীর উদ্দ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে।