ভার্চুয়ালি বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করল জবির ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ

  জবি সংবাদদাতা  সোমবার | জুন ৭, ২০২১ | ০৫:৪৩ পিএম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ ভার্চুয়ালি বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২১ উদযাপন করেছে। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন উপলক্ষে "Ecosystem Restoration" এই প্রতিপাদ্য বিষয়ের ওপর ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

রবিবার (৬ জুন) রাতে এই ভার্চুয়াল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। মূল বক্তা হিসেবে ছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী  মো. শাহাব উদ্দিন বলেন,  জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সংরক্ষণে দেশের সকল স্তরের জনগণ বিশেষ করে যুব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের প্রজম্মের সকলের সমবেত এবং শক্তিশালী প্রচেষ্টাই পারে পরিবেশকে অক্ষুন্ন এবং সমৃদ্ধ রেখে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে। হারানো প্রকৃতি ও প্রতিবেশকে পুনরুদ্ধারের মাধ্যমেই আমরা এ ধরিত্রীকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হবো। এ বছরের থিম অনুসারে ইকোসিস্টেমের যে উপাদানগুলো এখনও অক্ষত আছে তাদেরকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। আমরা হালদা নদীতে তা সম্ভব করে দেখিয়েছি। এখন হালদা নদীতে মাছ উৎপাদনের পাশাপাশি নদীর ইকোসিস্টেম ও সুরক্ষিত থাকছে। আমরা এভাবেই ধীরে ধীরে পরিবেশকে বাঁচাতে কাজ করতে চাই। 

অনুষ্ঠানের মূল বক্তা অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।  তিনি তাঁর প্রবন্ধ উপস্থাপনায় অনেকগুলো দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। যেমন-প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাতে নিজস্ব পদ্ধতিতে গাছের চারা উৎপাদন করে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে তা রোপন করে। শুধু গাছ রোপন করলেই হবে না, তা পরিচর্যার কথাও বলেছেন। রাষ্ট্রীয়ভাবে যাতে ঘোষনা করা হয় যে, কোন বছর কোন গাছের চারা উৎপাদন বা রোপন করা হবে। 

তিনি আরও বলেন, পরিবেশ বান্ধব এবং কৃষি বান্ধব একটি টিভি চ্যানেল যাতে খোলা হয়। উক্ত চ্যানেলে পরিবেশ রক্ষা, বনায়ন, গাছের চারা উৎপান পদ্ধতি, রোপন পদ্ধতি, পরিচর্যার পদ্ধতি এবং উন্নত কৃষি প্রযুক্তির পদ্ধতি সম্পর্কে প্রচার করা হবে। 

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধের উপর আলোচক হিসেবে সংযুক্ত ছিলেন অধ্যাপক ড. এ.এস.এম. মাকসুদ কামাল, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বাস্তুতন্ত্রের পুনরুদ্ধার করা মূলত অনেক কঠিন কাজ। তবে এখনো যদি আমরা বর্তমান বাস্তুতন্ত্র ধরে রাখতে না পারি তবে আমাদের ভবিষৎ কঠিন হুমকির সম্মুখীন হবে। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। তিনি বলেন, প্রকৃতি আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা হয়তো অনেকেই করোনা মহামারীর কারণে বুঝতে পেরেছেন। কিন্তু  পরিবেশ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে বহু বছর ধরে তাও এখনও অনেকেই এড়িয়ে চলেন সেই সচেতন বার্তা। 


অনুষ্ঠানের সভাপতি ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, বর্তমান সরকার পরিবেশ রক্ষার ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির সম্মুখীন। ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে প্রতি সাতজনে একজন জলবায়ু উদ্বাস্তু হবে। পরিবেশ বিপর্যয় রোধ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনের জন্য “Climate Change Trust Fund” নিজস্ব অর্থায়নে গঠন করেছে। 

এছাড়াও অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মল্লিক আকরাম হোসেন, অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান, মো. মহিউদ্দিন, ড. নিগার সুলতানা ও ড. মোহাম্মদ আল-আমীন হক উপস্থিত ছিলেন। 


প্রসঙ্গত, প্রতিবছর ৫ জুন, বিশ্বপরিবেশ দিবস (World Environment Day) পালিত হয়। এটি পরিবেশ রক্ষার সচেতনতা এবং নতুন পদক্ষেপকে উৎসাহিত করতে জাতিসংঘ পালন করে। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের  ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নেতৃত্ব দেয়ার জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক “Champions of the Earth” পদকে ভূষিত হয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারের পরিবেশ রক্ষার নিরলস প্রচেষ্ঠা সকল নাগরিকের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া সফল করা সম্ভব নয়।