

স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ক্ষমতা দখলের মাত্র ২ মাস পর ১৯৫৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করে। এই কমিশন ১৯৫৯ সালের ২৬ আগস্ট তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে শিক্ষা বিষয়ে যেসব প্রস্তাবনা ছিল তা প্রকারান্তরে শিক্ষা সংকোচনের পক্ষে যায়।
সেই সময় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন আইয়ুবের এই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্ব স্ব দাবির ভিত্তিতে জুলাই-আগস্ট মাস জুড়ে আন্দোলন করতে থাকে। এ আন্দোলন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে ১৭ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়। ওই দিন সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার মানুষ সমাবেশে উপস্থিত হন। সমাবেশ শেষে মিছিল বের হয়। জগন্নাথ কলেজে গুলি হয়েছে- এ গুজব শুনে মিছিল দ্রুত নবাবপুরের দিকে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু হাইকোর্টের সামনে পুলিশ এতে বাধা দেয়। তবে মিছিলকারীরা সংঘাতে না গিয়ে আবদুল গনি রোডে অগ্রসর হয়। তখন পুলিশ মিছিলের পেছন থেকে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও গুলিবর্ষণ করে। এতে তিনজন নিহত হয়। ওই দিন সারাদেশে মিছিলে পুলিশ গুলি করে। টঙ্গীতে ছাত্র-শ্রমিক মিছিলে পুলিশের এক শ্রমিকেরও হত্যার খবর পাওয়া যায়।
সেই সংগ্রামর ও ঐতিহ্যের শিক্ষা দিবস উপলক্ষে প্রগতিশীল ন্যাপের অন্যতম অঙ্গ সংগঠন বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন আজ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। সংগঠনের আহবায়ক নাজমুল হোসেন রিফাতের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রগতিশীল ন্যাপের আহ্বায়ক পরশ ভাসানী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরশ ভাসানী বলেন, দেশে শিক্ষার মান আজও উন্নত হয় নাই। যে বৈষম্য উৎখাত করার লক্ষ্যে আজ থেকে ৬০ বছর আগে সেই সময় ছাত্ররা যে আন্দোলন করেছিল আজ স্বাধীনতার ৫১ বছরে এসেও আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয় নাই। তিনি আরো বলেন, এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হতো প্রার্চ্যের অক্সফোর্ড অথচ এখন বিশ্বের ১০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের তালিকায় স্থান নাই। এর পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার গুণগত মানের অভাব, গবেষণায় অনাগ্র, শিক্ষক রাজনীতিসহ নানা প্রতিবন্ধকতাকে দায়ী বলে মনে করি। এর থেকে উত্তরণের উপায় আমাদের বের করতে হবে কারণ শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না।
আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আর বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য সচিব অমর কৃষ্ণ দাস, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক প্রীতম পোদ্দার, আলিফ মেরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য মোঃ জাবেদ সহ প্রমূখ।